এই তারিখে
গুয়ে মঠ
বৌদ্ধ ধর্মের প্রাচীন ইতিহাস
লাহুল-স্পিটি
- লিঙ্ক পান
- X
- ইমেল
- অন্যান্য অ্যাপ
পশ্চিমবঙ্গে বেশ কয়েকটা সমুদ্র সৈকত আছে, যেখানে বেড়াতে গেলে মনটা ভালো হয়ে যায়। কিন্তু কখনো কখনো আমরা ঠিক করে উঠতে পারিনা ঠিক কোন সমুদ্র সৈকতে বেড়াতে যাবো। এই পশ্চিমবাংলার যে দুটো বিখ্যাত সমুদ্র সৈকত আছে, সেগুলো হলো দীঘা এবং বকখালি। আমরা যারা ভ্রমণ প্রিয় মানুষ আছি তারা তুলনা করি কোন জায়গা বেশি সুন্দর, যাতে অন্যদের পরামর্শ দিতে পারি। তাছাড়াও অনেকেই প্রশ্ন করে কোন জায়গায় বেশি ভালো লাগবে।
জনপ্রিয়তার দিক থেকে বলতে পারি দীঘা অনেক বেশি জনপ্রিয়। প্রচুর মানুষ দীঘা ভ্রমণ করেছেন এবং আবারো ভ্রমণ করবেন বলে ঠিক করে রেখেছেন। কেউ কেউ প্রতি বছর একবার করে দীঘা বা মন্দারমণি ঘুরতে যান। সেই হিসাবে অনেকে হয়তো বকখালি জায়গাটার নামটাই শোনেননি।
পর্যটনের দিক থেকে বলতে গেলে বলতে হয়, প্রতিটা ভ্রমণ স্থানের আলাদা আলাদা গুরুত্ব আছে। একই জায়গায় বার বার যাবার থেকে নতুন নতুন জায়গায় ঘুরতে যাওয়া সবথেকে বেশি ভালো। নতুন নতুন পরিবেশে নতুন নতুন অভিজ্ঞতা সঞ্চয় হয়। যেটা ভ্রমণের আসল মজা।
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের দিক থেকে বিচার করলে বকখালি অনেক বেশি সবুজ। সাদা বালির সমুদ্র সৈকত। ম্যানগ্রোভ জঙ্গলে পূর্ণ সমুদ্র সৈকতের আশপাশ। তবে বাঘ নেই এই ম্যানগ্রোভ জঙ্গলে। আছে ঝিঁ ঝিঁ পোকার ডাক। সমুদ্র পাড়ের জনবসতি কম থাকার জন্য সমুদ্র সৈকত এখনো অনেক বেশি সুন্দর।
অপরদিকে দীঘার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বর্তমানে তুলনামূলক কম। আগের সেই সবুজ আর নেই। তবে দীঘা সমুদ্রের ঢেউ অনেক বেশি। সেই ঢেউয়ের মজা নিতে বা সমুদ্র স্নানের মজা নিতে প্রচুর মানুষ প্রতি বছর বিভিন্ন সময়ে সেখানে ভিড় জমান।
দীঘায় এক দুদিন থেকে বেশ কয়েকটা জায়গা ঘুরতে পারবেন, যেমন মন্দারমণি, শঙ্করপুর, তাজপুর, মোহনা, তালসারি, উদয়পুর, আরো বেশ কয়েকটা জায়গা। যেগুলোর সৌন্দর্য কোনো অংশে কম না।
বকখালীতে দু-একদিন থেকেও আপনি ঘুরতে পারেন বেশ কয়েকটা জায়গা। যেমন ফ্রেসারগঞ্জ, হেনরি আইল্যান্ড, কার্গিল সমুদ্র সৈকত, মৎস বন্দর, জুম্বদ্বীপ, লালগঞ্জ প্রভৃতি জায়গা।
দীঘার সমুদ্র সৈকত যেমন উপভোগ্য, তেমনি বকখালির সূর্যাস্ত এবং লাল কাঁকড়া বিখ্যাত।
যোগাযোগ ব্যবস্থার দিকে থেকে বিচার করলে দীঘা অনেক বেশি সুবিধাজনক। প্রচুর ট্রেন এবং বাস আছে দীঘা পৌঁছনোর। বকখালি যাবার ডাইরেক্ট কোনো ট্রেন নেই। নামখানা থেকে বাস ধরে যেতে হয়। এছাড়া ধর্মতলা থেকে ডাইরেক্ট বাস আছে বকখালি যাবার।
কলকাতা থেকে দীঘার দূরত্ব কমবেশি ১৮৩ কিলোমিটার। আর কলকাতা থেকে বকখালীর দূরত্ব কমবেশি ১২৫ কিলোমিটার। যাতায়াত খরচ বিচার করলে দীঘার খরচ বেশি পড়বে। সময়টাও বেশি লাগবে। সেই তুলনায় বকখালি যাবার খরচ কিছুটা কম।
দীঘায় দু-একদিন থেকে দর্শনীয় স্থান ভ্রমণের খরচটাও বকখালীর থেকে অনেক বেশি। বকখালীর দর্শনীয় স্থানগুলোর দূরত্ব বকখালি থেকে কাছাকাছি হওয়ায় খরচ অনেকটা কম হয়।
দুটো জায়গাই পশ্চিমবাংলায় অবস্থিত হাওয়ায় খাওয়া খরচ দুটো জায়গার প্রায় সমান বলা যায়। খাবারের মান বিচার করলেও দুটো জায়গাকে আমি সমান বলতে পারি। তবে বকখালীর সমুদ্র সৈকতের মাছ ভাজা দীঘার সমুদ্র সৈকতের মাছ ভাজার থেকে ভালো। কারণ বকখালীর মাছ অনেকটাই টাটকা দীঘার থেকে।
দীঘায় প্রচুর মানুষের ভিড় জমে বছরের প্রতিটা সময়, তাই দীঘায় প্রচুর হোটেল আছে। সেই তুলনায় বকখালীতে হোটেল অনেক কম। বকখালীতে এখনো সেভাবে ভিড় না হাওয়ায় হোটেল পেতে অসুবিধা হয়না। দুটো জায়গায়তেই বিভিন্ন মানের এবং বিভিন্ন দামের হোটেল আছে। আর দুটো জায়গাতেই সপ্তাহান্তের হোটেল খরচ বেশি পড়ে।
দীঘার যাতায়াত এবং দর্শনীয় স্থান ভ্রমণ খরচ বেশি হাওয়ায় দীঘার ভ্রমণ খরচ বেশি হয়। সেই খরচ বকখালীতে তুলনামূলক কম হয়।
সব শেষে এটা বলতে পারি যে, যদি প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে চান তাহলে বকখালির তুলনা নেই। আর সমুদ্র সৈকত উপভোগ করতে হলে দীঘা ভালো বলা যায়।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন