এই তারিখে
গুয়ে মঠ
বৌদ্ধ ধর্মের প্রাচীন ইতিহাস
লাহুল-স্পিটি
- লিঙ্ক পান
- X
- ইমেল
- অন্যান্য অ্যাপ
শীত আসলেই কাজ বেড়ে যায় কালীপদর। সারা বছরের অন্যান্য কাজের সাথে জুড়ে যায় আরো কাজ। সারা শীত জুড়ে জোগাড় করতে হয় খেজুর রস। তাই নিজের এলাকায় কত খেজুর গাছ আছে সব খোঁজ রাখতে হয় তার। কারণ শীত মানেই খেজুরের রস আর নলেন গুড়। আর নলেন গুড় মানেই জয়নগরের মোয়া। এই জয়নগরের মোয়া বানাতে লাগে প্রচুর পরিমানে নলেন গুড়। আর এই শীতের মরশুম ছাড়া সেটা পাওয়াও যায়না। কালীপদর মতো লোকেরাই এই শীতের সময় যোগান দিয়ে থাকে নলেন গুড়ের।
এই মোয়ার খোঁজেই বেরিয়ে বেরিয়ে পড়েছিলাম জয়নগর। আসল খাঁটি মোয়া খেতে হলে জয়নগর যেতেই হবে। যদিও জয়নগর খাঁটি মোয়ার আসল জায়গা নয়। তবুও জয়নগর গেলে অনেকটাই ভালো মোয়ার সন্ধান পাবেন। সারা কলকাতা জুড়ে যে মোয়া পাওয়া যায় তার বেশিরভাগটাই সেই মাপকাঠির আশেপাশেও যেতে পারে না।
কিছু মানুষ আছেন যারা আজও ভালো বা আসলের সন্ধানে ছুটে বেড়ান। সেই ভালো মোয়া বা আসল মোয়ার খোঁজেই প্রচুর মানুষ ছুটে যান বহড়ু। জয়নগরের একটা গ্রাম বহড়ু। জয়নগর রেল স্টেশন থেকে বহড়ুর দূরত্ব ৪ থেকে ৫ কিলোমিটার।
জয়নগর থেকে বহড়ু যাবার পথেই পাবেন গুড়ের হাট। এই শীতকালে রাত ২:৩০ থেকে ভোর ৫টা-৬টা পর্যন্ত বসে এই গুড়ের হাট। খাঁটি নলেন গুড়ের সন্ধান এখানেই পাবেন। ডিসেম্বরের মাঝামাঝি থেকে শুরু হয় এই হাট। কারণ শীত ঠিকঠাক না পড়লে খেজুর গাছে রস আসেনা।
ডিসেম্বরের শুরু থেকে কালিপদ সর্দার-রা খেজুর গাছ কাটতে থাকে। গাছ তৈরী আছে বুঝলেই ঝুলিয়ে দেওয়া হয় হাঁড়ি। প্রতিদিন সকালে পেড়ে আনতে হয় রসের হাঁড়ি। তারপর সেই রস জাল দিয়ে তৈরী হয় গুড়। এই গুড় দিয়েই তৈরী হয় খাঁটি জয়নগরের মোয়া।
আসল গুড় ছাড়া আসল জয়নগরের মোয়া বানানো সম্ভব না। তাই আসল মোয়ার সন্ধান ডিসেম্বরের মাঝে মাঝি সময় থেকে পাওয়া যায়। এই সময়টাই বহড়ুর মোয়া শিল্পীদের সেরা সময়। এই সময় বহড়ুর যুবকেরা কলকাতা শহরের বিভিন্ন প্রান্তে মোয়া তৈরির কাজে চলে যায়। তাই সময় করে চলে যেতে পারেন জয়নগর, খাঁটি মোয়ার সন্ধানে। জয়নগর স্টেশনে বা তার আশেপাশেও মোয়ার দোকান পাবেন। সেই মোয়াও অনেকটা ভালো। সেখানেও বিভিন্ন দামের মোয়া পাওয়া যায়। অনেকটাই ভালো আশা করতে পারেন।
এবার বলি কিভাবে যাবেন। শিয়ালদহ লক্ষ্মীকান্তপুর লোকাল ধরে নেমে পড়বেন জয়নগর স্টেশন। ওখান থেকে অটো ধরে যেতে হবে বহড়ু। শিয়ালদহ থেকে জয়নগর ট্রেন ভাড়া ১৫ টাকা। জয়নগর থেকে বহড়ু অটো ভাড়া ২০ টাকা। বহড়ুর গ্রামে ঢুকে পড়তেও পারেন আবার দোকান ঘুরে দেখতেও পারেন।
আসল মোয়ার দাম একটু বেশি বলা যেতে পারে। কারণ সেখানে নির্ভেজাল নলেন গুড় এবং খাঁটি ঘি দিয়ে তৈরী হয় এই মোয়া। যার মধ্যে আরো অনেক উপকরণ থাকে যেগুলো বেশ দামি। তাই আসল মোয়ার দাম বেশিই হবে। সবথেকে কম দামি ভালো মোয়ার দাম ১৫ টাকা একটা। তবে জয়নগর রেলস্টেশনে কম দামের মোয়াও আছে। মোটামুটি ৬০ টাকা প্যাকেট। যে প্যাকেটে ১০টা মোয়া থাকে। সেই প্যাকেট কলকাতার বাজারে ১২০ টাকা করে বিক্রি হয়।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন