এই তারিখে
গুয়ে মঠ
বৌদ্ধ ধর্মের প্রাচীন ইতিহাস
লাহুল-স্পিটি
- লিঙ্ক পান
- X
- ইমেল
- অন্যান্য অ্যাপ
উত্তরবঙ্গ বা সিকিম ঘুরতে যাবার প্রথম এবং প্রধান গন্তব্য নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন। প্রতি বছর প্রচুর পর্যটকের পা পড়ে এই জায়গায়। বছরের প্রায় প্রতিটা ঋতুতেই এখানে ভিড় থাকে। এনযেপি থেকে সিকিম যাবার কোনো এরোপ্লেন পরিষেবা নেই। তাই গাড়ি করেই যেতে হয়। এনযেপি থেকে গ্যাংটক বাস বা প্রাইভেট গাড়ি পরিষেবা আছে।
সিকিম বেড়ানোর প্রচুর জায়গা আছে। পাহাড়ি গ্রাম থেকে শুরু করে লেক ঝর্ণা ইত্যাদি। বছরের বিভিন্ন সময়ে সে সবের রূপও বিভিন্ন। সিকিমের পর্যটন গন্তব্য দিন দিন বেড়েই চলেছে। অচেনা অজানা জায়গার খোঁজ পায় যায় প্রায় প্রতিদিন। প্রতিবার এক-দুই দিন থেকে শুরু করে ৮-১০ দিন পর্যন্ত ভ্রমণ পরিকল্পনা করা যায়।
৪-৫ ঘন্টার দুরুত্বে ভালো ভালো ভ্রমণ গন্তব্য আছে। যেটার বাস ভাড়া ২৫০ থেকে ৬০০ টাকা পর্যন্ত (এসি/নন এসি)। কম খরচে ঘোরার সেরা উপায় এটাই। শিলিগুড়ি তেনজিং নোরগে বাস ট্যার্মিনাস থেকে এই পরিষেবা পাওয়া যায়।
প্রাইভেট গাড়ি করেও বিভিন্ন গন্তব্যে যাওয়া যায়। সেখানে গাড়ি ভাড়া অনেকটাই বেশি পড়ে। তবে সময়টা অনেকটা কম লাগে। সেক্ষেত্রে গাড়ি ভাড়া ৩৫০০ থেকে ৫৫০০ পর্যন্ত হয়েযায় দুরুত্ব অনুযায়ী। আর এই পরিষেবাতেই প্রচুর অভিযোগ শোনা যায়। যাত্রী হয়রানি থেকে টাকা নিয়ে ঝামেলা সবই চলে।
কম খরচে বেড়াতে হলে সপ্তাহের ছুটির দিন বাদে আস্তে হবে। সপ্তাহান্তে সব কিছুর খরচ বেশি হয় (গাড়ি থেকে হোটেল সবই)। গ্রুপ ট্যুর করলে প্রাইভেট গাড়ি খরচ কম হয়। আরাম দায়ক ভ্রমণের জন্য এসি গাড়ি ভালো।
প্রাইভেট গাড়ির যাত্রী পরিষেবা নিয়ে যে অভিযোগগুলো আসে সেগুলো নিয়ে বলবো।
সোজাসুজি অফবিট যাবার গাড়ি এখান থেকে বুকিং করতে পারেনা কেউ। ট্রেন স্টেশন থেকেই ড্রাইভার-রা গাড়ি নিয়ে যাবার কন্টাক্ট করে স্টেশন-এর বাইরে নিয়ে আসে। তারপরেই কোনো না কোনো ট্রাভেল অফিস-এ ঢুকিয়ে দেয়। ওদের কাজই হলো যাত্রী ধরে এনে অফিস-এ ঢোকানো। আর তাদের বলা গাড়ি ভাড়ার কোনো মূল্য অফিসগুলোতে থাকে না। নতুন করে ট্যুর প্ল্যান করে অফিস থেকে। আর পুরোটাই রাউন্ড ট্রিপ। রাউন্ড ট্রিপ না করলে কোনো গাড়ি আপনাকে নিয়ে যাবেই না। সেই রাউন্ড ট্রিপ কিভাবে হয় আর কেমন করে দালালি খাওয়া হয় সেটা বলবো এবার।
উদাহরণ দিয়ে বোঝাই। ধরুন সিল্ক রুট ঘুরতে যাবেন। ঠিক করলেন সিলারি গাওঁ, আরিতার, জুলুক হয়ে ঋষিখোলা ঘুরে এনযেপি ফিরবেন। এই ট্যুর প্ল্যান নিয়ে সিকিম ট্রাভেল এজেন্ট-এর সাথে কথা হবে। তারা কত টাকা নেবে সেটা দেখবে আগে। সেটা ফাইনাল হলে, তার উপর সব থেকে কম ১০০০০ টাকা এরা চাপাবে। এর কোনো লিমিট নেই। যাকে যেভাবে মুরগি করা যায়। যে টাকাটা এরা চাপাবে সেটাই অ্যাডভান্স। তারপর যে এই ট্যুর করবে সে কি খেলা দেখাবে, বা কেমন পরিষেবা দেবে সেটা আগে থেকে জানতেই পারবেন না। সেখানেও চলে যাত্রী হয়রানি। নিচের ভিডিওতে সেসব সম্পূর্ণ দেখানো হয়েছে। দেখতে পারেন।
ভ্রমণ পরিষেবা যে দেবে তার সাথে শুরুতেই দেখা হবেই এমন আশা নেই। কারণ সে সিকিম-এ। বিভিন্ন স্পটে গাড়ি আসবে আর আপনি গাড়িতে করে চলে যাবেন। সিকিম ঢুকলেই টাকা নেবার সময় আপনার সাথে দেখা হবে। টাকা নেবার পর ভ্রমণ পরিষেবার অবনতি ঘটে। সেসব মানিয়ে নেবার দায়িত্ব শুধু আপনার। সে আর আপনাকে তেমন পাত্তা দেবেই না। আপনার কোনো কথাই আর গুরুত্ব পাবে না। এখানেই শেষ না।
নতুন খেলা শুরু হয় ফেরার দিন। সকাল সকাল আপনার কাছে ড্রাইভারের ফোন আসবে এটা জানতে যে, ট্রেন টাইম কখন আর বেরোবেন কখন। আর রাস্তা খারাপ ঘুরে যেতে হবে বলে গল্প শোনানো হবে আর এক্সট্রা টাকা চাওয়া হবে। সেটাও কম করে ২০০০ টাকা। রাস্তার মাঝখানে পেট্রল পাম্পে গাড়ি দাঁড় করিয়ে তেল ভরার নাম করে সেই টাকা আদায় করা হয়। নয়তো গাড়ি যাবেনা বলে যাত্রী হয়রানি শুরু হয়। ট্রেন যাতে মিস না হয়ে যায় সেই কারণে যাত্রীরা দামদর করতে শুরু করে। দামদর করলে ড্রাইভার অনেকটা হালকা হয় এবং ১৫০০ তে রফা করে ফেলে। যদি না দিতে চান তাহলে ফোন যায় ট্যুর অপারেটর-এর কাছে। ট্যুর অপারেটর সোজাসুজি টাকা চাইবে না। ড্রাইভার কে দিয়ে চাপ দেবে টাকা দেবার জন্য। নয়তো গাড়ি দাঁড় করিয়ে রাখবে, বিভিন্ন হয়রানি করবে। ভয় ওদের একটাই, ভিডিও রেকর্ডিং। তাই যখনি এমন ঘটনা ঘটবে ভিডিও রেকর্ড করুন। সোশ্যাল মিডিয়াতে ছাড়ুন। এক্সট্রা টাকা দিতে অস্বীকার করুন।
ভ্রমণ দালালি কমাতে ডাইরেক্ট বুকিং করুন। সিকিম-এর হোটেল বা হোমস্টে সমস্ত ট্যুর করিয়ে দেয়। এনযেপি থেকে নিয়ে যাবে আবার এনযেপি ছেড়ে দেবে। মাঝের এই ১০০০০ থেকে ১৫০০০ টাকা দালালি দিতে হবেইনা। ভ্রমণ পরিষেবা একই থাকবে। শুধু সচেতন থাকতে হবে সব সময়।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন